Saturday, May 4, 2024

বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষে পালটে গেছে কালীগঞ্জের অর্থনৈতিক চিত্র

কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার কৃষকের অর্থনৈতিক চিত্র পালটে দিয়েছে লটকন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজার দখল করতে পারায় এই ফলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়েই চলছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় দিনে দিনে সোনালি ভবিষ্যৎ গড়ে উঠছে স্থানীয় লটকন চাষিদের। ঘুচে যাচ্ছে বেকারত্বের গ্লানিও। তবে কৃষি অফিস বলছে, কম খরচে, কম সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছর এ ফল চাষে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।

সরেজমিনে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বরাইয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঐ গ্রামের চাষি মো. আতিকুল্লাহ ভূঁইয়ার লটকন বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন। ভিটামিন-সি, প্রোটিন ও ক্যালরি যুক্ত মুখরোচক এ ফল পেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক আতিকুল্লাহ। বাজারজাতকরণের আগ মুহূর্তে নানা পদ্ধতিতে পোকামাকড় দূর করছেন। একই চিত্র দেখা যায় উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়গাঁও, জামালপুর ইউনিয়নের গোল্লারটেক, নাগরী ইউনিয়নের নগরভেলা ও সেনপাড়া গ্রামে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জের নাগরী, জাঙ্গালীয়া, জামালপুর ও মোক্তারপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করছেন চাষিরা। তবে কম খরচে, কম সময়ে ভালো ফলন ও অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছর এ ফল চাষে দিনদিন চাষির সংখ্যা বাড়ছে। উপজেলার বড়গাঁও ভিটিপাড়া গ্রামের চাষি মোবারক হোসেন বলেন, বাগানে ১২০টির মতো লটকন গাছ রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলনও খুব ভালো হয়েছে। লটকন ছায়ার মধ্যে হয়। তবে এর জন্য আলাদাভাবে শ্রমিক লাগে না। খরচ কম হওয়ায় এ ফল চাষ অনেক ভালো। আর ফুল আসার সময় একটু পানি ব্যবহার করতে হয়। লটকন গাছে থাকা অবস্থায় স্থানীয় পাইকাররা বাগান কিনে নেয়। একই গ্রামের মো. হাবিবুল্লাহ নামে আরেক চাষি বলেন, ‘নিজেও লটন বাগান করেছি। তাছাড়া আশপাশের অনেকেই এই ফলটির চাষ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে লটকন চাষ করে বেশ লাভবান। ’

ঐ গ্রামের বেকার যুবক বিজয় দত্ত বলেন, কম সময়ে কম পুঁজিতে লটকনের চাষ করা হয়। এ ফলটি চাষে সহজেই বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। তিনি নিজেও এক সময় বেকার ছিলেন। পরে লটকন চাষ করে নিজের বেকরত্ব দূর করেছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান রুবেল বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা লটকন চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেন। সঠিক পরিচর্যা ও সুষম সার ব্যবহারের মাধ্যমে এবার লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, মাঠ পর্যায়ে চাষিদের চারা বিতরণ, রোপণ, পরিচর্যা ও রোগবালাই নিরসনে নানা পরামর্শসহ কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত আছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, একটা সময় বসতবাড়িতে লটকন চাষ হতো। তবে এর চাহিদা থাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে এ ফল বিক্রি করছে কৃষকরা।-ইত্তেফাক

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট