Monday, April 29, 2024

‘ঢাকার মানুষ বোঝে না একটা গরু পুষতে কতটা কষ্ট’

‘ঢাকার মানুষ বোঝে না একটা গরু পুষতে কতটা কষ্ট। একটা গরু দুয়েকদিনেই এতো বড় হয়ে যায় না। গরু বড় করতে হলে কয়েকবছর সময় লাগে। ছোট থেকে নিজের সন্তানের মতো করে যত্ন করতে হয়। টাকা খরচ করতে হয়। আর ঢাকার মানুষ ভাবে গরুকে খাওয়ালেই বড় হয়ে যায়। একটা গরুর পেছনে যে টাকা খরচ হয় সেই টাকাই দিতে চায় না। কষ্টের দামতো দূরের কথা।’

এভাবেই বলছিলেন চুয়াডাঙ্গা থেকে গরু নিয়ে ঢাকার গাবতলী হাটে আসা মো. শাহজাহান আলী। আদর করে গরুটির দাম রেখেছেন বাহদুর। প্রায় ২৫ মণ মাংস হবে বলে জানান তিনি। বুধবার হাটে তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

শাহজাহানের ভাষ্য মতে, ২৫ মণ মাংসের গরুটির দাম চাইছেন সাড়ে আট লাখ টাকা। তবে যে দাম হচ্ছে তাতে সাড়ে তিন বছরে যে টাকার খাবার খাইয়েছেন সেই দামই পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

মো. শাহজাহান আলী বলেন, ‘আদর করে গরুটির নাম রেখেছি বাহাদুর। প্রায় ২৫ মণ মাংস হবে। দাম চাইছি সাড়ে আট লাখ টাকা। কিন্তু সর্বোচ্চ দাম উঠেছে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছর ধরে গরু পুষছি। সাড়ে তিন বছরে একটা গরুর তো আর কম খাওয়াতে হয়নি। সেই ছোট থেকে খাওয়াতে খাওয়াতে আজ এতো বড় করতে হয়ছে। একটা গরুকে যদি হাতির সাইজের বানাতে হয় তাহলে তাকে কতটাকার খাওয়ানো লাগে?’

খরচের বর্ণনা দিয়ে শাহজাহান বলেন, ‘এক কেজি ভুষি এখনকার বাজারে ৬০ টাকা কেজি কেনা লাগে। একটা গরুর পেছনে সারাদিন একটা মানুষ না থাকলে এতো বড় একটা গরু পোষা যায় না। সব সময় একটা গরুর সব দিক খেয়াল রাখা লাগে। বছরের পর বছর একটা গরুর পেছনে এতো কষ্ট করে খেয়াল রেখে যত্ন করে টাকা খরচ করে ঢাকায় নিয়ে আসি। কিন্তু ঢাকার মানুষ মনে করে যে গরু খালি পোষে খর ভুষি দিলেই গরু এতো বড় হয়ে যায়। কিন্তু এই গরুর পেছনে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এতো বড় করতো হয়।’

এদিকে আজই কোরবানির পশু বিক্রির ধুম লাগার কথা থাকলেও সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে বিক্রিতে ভাটা পরেছে বলে জানাচ্ছেন পশু ব্যাবসায়ীরা। ফলে পশু বিক্রি নিয়ে কপালে দুচিন্তার ভাঁজ পরতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হটে ক্রেতা কম। অধিকাংশ বিক্রেতাই অবশর সময় পার করছেন। কেউ কেউ আবার বৃষ্টির মধ্যেই চেয়ারে বসে ঘুমিয়ে নিচ্ছোন। অধিকাংশ ব্যাবসায়ি বাজারে কাউকে প্রবেশ করতে দেখলেই হাকডাক ছেড়ে ক্রেতা ডাকছেন।

আলডাঙ্গা থেকে তিনটি গরু নিয়ে আসছেন ইসমাইল শেখ। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, গতকালও মোটামুটির ক্রেতা ছিল বাজারে। কিন্তু আজ সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে খুব একটা ক্রেতা নেই। বড়লোকদের কাছে গরু বিক্রি করে একটু লাভের আশায় আমরা ঢাকা আসি কিন্তু তারাতো এই বৃষ্টি কাদার মধ্যে কেউ গরু কিনতে আসছে না। শেষ পর্যন্ত গরু ফেরত নিয়ে যেতে হবে নাকি বলতে পারছি না।

অন্য এক বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, যে গরুর দাম গতকালও আড়াই লাখ টাকা বলেছে আজ সেই গরুর দাম বলছে দুই লাখ টাকা। বছরের পর বছর জুরে কষ্ট করে খরচ করে গরু পুষেছি আর সেই কষ্টের দাম না হয় নাই পেলাম সঠিক দাম যে পাবো তাও পাচ্ছি না। এভাবে দাম হলেতো এবার বাড়িতে ফেরত নিয়ে যেতে হবে গরু।

সূত্র: ঢাকাটাইমস২৪।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট