Friday, April 26, 2024

কচুর লতি চাষে কৃষকদের ভাগ্যবদল!

এখানকার উৎপাদিত কচুর স্বাদে খুব মজাদার ও পুষ্টিগুন সম্পন্ন। তাই এটি স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকয় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এর চাষে খরচ কম ও ফলন বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও উৎপাদিত কচুর লতির বাজারদর ভালো থাকে বলে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। জয়পুরহাটে লতিরাজ কচু চাষে কৃষকরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।

জেলার আয়মারসুলপুর, বেলপুকুরস বাগজানা, শিমুলতলী, দরগাপাড়া, বালিঘাটা, কড়িয়া, ধরঞ্জি, স্লুইচ গেটসহ উপজেলার বিভিন্ন ডোবা ও নিচু জমিতে কৃষকরা এর চাষ করছেন। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং এপ্রিল থেকে মে মাস এই দুই মৌসমে কচুর লতির চাষ করা হয়। এর চাষে মাত্র ১-২ মাস পর থেকেই লতি বিক্রি করা যায়। যা প্রায় পরবর্তী ৭-৮ মাস পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এছাড়াও এর কান্ডও বড় হতে থাকে। কৃষকরা বিঘাপ্রতি ৩-৪ টন লতি পেয়ে থাকেন। এখানকার উৎপাদিত লতি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় ২০টি দেশে রপ্তানি হয়। মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করে কৃষকরা ৮০-৯০ হাজার টাকার লতি বিক্রি করতে পারেন।

কৃষক লুতফর রহমান বলেন, গত ২৫ বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া কচুর লতির চাষ এখন বিরাট আকার ধারন করেছে। বর্তমানে এই জেলায় প্রায় ৩০০ শ্রমিকেরও বেশি কচুর লতির জমিতে কাজ করে উপার্জন করে থাকেন। বর্তমানে এখানকার কচুর লতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে, কুয়েত, সৌদি আরবসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এতে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি দূর হয়েছে বেকারত্ব।

কৃষক দোলন কুমার বলেন, আমি এবছর ৪ বিঘা জমিতে লতি চাষ করেছি। গত বছর ৩ বিঘায় চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম। স্থানীয় ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় এখানকার লতির বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই বাজারে ভাল দামও পাওয়া যায়। কচু ও লতি বিক্রি করে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ করতে পারি। এর চাষে বিঘাপ্রতি আমার ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়।

উপজেলার দরগাপাড়া গ্রামের লতি চাষি নূরুল আমিন বলেন, আমিসহ এলাকার আরো অনেকেই লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। আমি গত বছর ১ বিঘায় চাষ করেছিলাম। এর চাষে পুরো ৬ মাস জুড়ে ফলন পাওয়া যায়। ফলে লাভের পরিমানও বাড়ে। লাভ হওয়ায় এবছর ৩ বিঘায় চাষ করেছি।

ঢাকা থেকে লতি কিনতে আসা আবু জাফর বলেন, জেলার বটতলী বাজার থেকৈ প্রতিদিন প্রায় ৬০-৮০ টন লতি বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ হচ্ছে। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতিকেজি লতি ৫০-৬০ টাকা দরে কিনে ঢাকায় সরবরাহ করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোছা. রাহেলা পারভিন বলেন, এই মৌসুমে জেলায় ১৮০০ হেক্টর জমিতে লতির চাষ করা হয়েছে। আমরা সব সময় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছি। আশা করছি এর থেকে প্রায় ৮০ হাজার টন লতি উৎপাদিত হবে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট