Saturday, May 4, 2024

ইউটিউব দেখে শাম্মাম চাষে কৃষকের চমক

১৫ বছর ধরে কৃষি পেশার সাথে জড়িত মুন্নাফ আলী মন্ডল। প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ করে থাকেন তিনি। এবারে ইউটিউব দেখে শাম্মাম ফল চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে বিষয়টি সাড়া ফেলেছে পুরো জেলা জুড়ে।

মধ্যপ্রাচ্যে বেশ জনপ্রিয় ফল ‘শাম্মাম’ যা বাংলাদেশে ‘রকমেলন’ নামেও পরিচিত। শাম্মাম বিদেশি ফল হলেও এখন এ দেশের মাটিতেও এ চাষ হচ্ছে। মালচিং পদ্ধতিতে শাম্মাম চাষ করা হয়। চারা রোপণের ৬০-৭০ দিনে এ ফল সংগ্রহ করা যায়।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মুন্নাফ আলী মন্ডল। উপজেলার তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শাম্মাম ফলটির চাষ শুরু করেছেন তিনি। ফলটি চাষে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ইতিমধ্যে আয় করেছেন দুই লক্ষাধিক টাকা। ফলন শেষ হওয়ার আগেই আরো দুই লক্ষাধিক টাকা আয়ের আশা কৃষকের।

কৃষক মুন্নাফ আলী বলেন, ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করেন তিনি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো থাকায় লাভের আশায় এর চাষ শুরু করেছেন। তিন বিঘা জমিতে চাষ করতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রথম প্রথম ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছেন। এখন ক্ষেত থেকেই পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয়ভাবে এ ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা আছে। শাম্মাম বা রকমেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০-১০০ টাকা কেজিতে ক্ষেত থেকে ফল বিক্রয় করেছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবার সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক সর্ব প্রথম চাষ শুরু করেন। এবার জেলায় মোট ২ একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।

সাম্মাম ক্ষেত পরিদর্শন করা মাঠ পরিদর্শক বলেন, এটি একটি বিদেশী ফল। এই ফলের চাহিদা ঢাকায় খুব বেশি। আমাদের কৃষক এই ফল চাষ করে ফলন যেমন ভালো পেয়েছেন তেমনি ফল বিক্রয় করে লাভবান হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষকেরা এখন বিভিন্ন রকম ফলের আবাদ করছে। এই সাম্মাম ফল আবাদের মাধ্যমে আমাদের কৃষিতে একটি নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। কৃষকরা এ ফলের চাষ বাড়ালে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। তেমনি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে শাম্মাম একটি জনপ্রিয় ফল। আমাদের দেশে এটি নতুন এলেও সুপার শপগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও শাম্মাম চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া শাম্মাম চাষে উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এ বিষয়ে যথাযথ সহায়তা দেওয়া হবে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট