Friday, May 3, 2024

আম ও লিচু বাগানে বস্তায় আদা চাষ, লাভবান চাষি রুহুল আমিন!

কৃষি কাজ করে সংসারের আয় উপার্জন বাড়াতে চেষ্ট করেন। ধানের জমির পাশাপাশি বিভিন্ন ফল ও ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করেন। তারপর তিনি আম ও লিচুর বাগানে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। পরিক্ষামূলক চাষে প্রথমেই সফলতা পান তিনি। তারপর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তাকে অনুসরণ করে অনেকেই আদা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আম ও লিচু বাগানে বস্তায় আদা চাষে সফল রুহুল আমিন। তিনি তাদের ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছেন। তারপর বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে হয়।

রুহুল আমিন নওগাঁয় পত্নীতলা উপজেলার আমবাটী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে দেখে আদা চাষে আগ্রহী হন। তারপর তিনি তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ৪ হাজার বস্তায় আদার চাষ করেন। প্রথমবারের মতো চাষ করেই তারা লাভবান হতে পারেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি এলাকার অনেক চাষিরা বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তারপর বাণিজ্যিকভাবে আম ও লিচু বাগানের ফাঁকা জায়গায় ও বাড়ির পাশে চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন।

রুহুল আমিন বলেন, আমি অনলাইনের মাধ্যমের বস্তায় আদা চাষের বিষয়টি জানতে পারি। লাভজনক মনে হওয়ায় নিজেই চাষ করবো বলে পরিকল্পনা করি। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ৪ হাজার বস্তায় আদা করেছি। বাজারে ভাল দাম থাকায় প্রথমবারের চাষে লাভবান হতে পেরেছি। সাধারন পদ্ধতি থেকে বস্তা পদ্ধতিতে ফলন বেশি পাওয়া যায়। এবারো বাজারদর ভালো থাকলে গত বছরের মতো লাভবান হতে পারবো। আমি ২০১৯ সালে ৩৮ শতাংশ জমিতে বারি আম-৪ ও আম্রপালি জাতের ১৬০টি গাছ রোপন করে বাগান করি। সেই বাগানে গাছের ফাঁকে ৪ হাজার বস্তায় আদার চাষ করি। প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারি। তারপর ২০২১ সালে আরেকটি লিচুর বাগান তৈরী করি। আশা করছি এবছর আদা বিক্রি করে ১০-১২ লাখ টাকা আয় করতে পারবো। বর্তমানে আম ও লিচুর বাগানে এছাড়াও বাড়ির আশেপাশে মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার বস্তায় আদার চাষ করছি।

রুহুল আমিনের স্ত্রী নার্গিস বলেন, পরিমাণমতো জৈব, রাসায়নিক সার এবং বেলে দোআঁশ মাটির সঙ্গে দানাদার কীটনাশক মিশিয়ে বস্তাগুলো ভরা হয়। তারপর বস্তায় পরিপক্ক আদা ১০-১৫ দিন রেখে দেওয়া হয়। তারপর একেকটি আদা থেকে ৩-৪টি কুশি বের হয়। বীজ বপন থেকে সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রতি ২৫ টাকা খরচ হয়। প্রতি বস্তায় ৬০০-৭০০ গ্রাম করে আদা পাওয়া যায়। কুশিগুলো পরে বস্তায় রোপন করা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, দেশের অন্যান্য কয়েকটি জেলায় এভাবে আদার চাষ হলেও নওগাঁয় নতুন। রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে সফল হয়েছেন। বাগানগুলো ফাঁকা জায়গা খালি না রেখে সেখানে এমন উদ্যোগ নেওয়া খুবই প্রশংসনীয়। আমরা তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করবো। তাদের দেখাদেখি অনেকেই আদা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট