Wednesday, May 8, 2024

সৌদি খেজুরের নার্সারিতেই স্বাবলম্বী

চার বছরের ব্যবধানে এখন তার বাৎসরিক আয় ৫-৭ লাখ টাকা। কঠোর পরিশ্রমে এ সফলতা পেয়েছেন সোলায়মানের পরিবার। তবে রোগবালাই ও সার ব্যবস্থাপনাসহ পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সৌদি খেজুরের নার্সারি ও চারা বিক্রি করে স্বাবলম্বী শরীয়তপুরের সোলায়মান খান।

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউপির ছোটকাচনা গ্রামের খেজুর বাগানে সার্বক্ষণিক পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত থাকেন সোলায়মানসহ তার বাবা ও দুই ভাই। ভাগ্য ফেরাতে ইউটিউবে ভিডিও দেখে ও খেজুর বাগান পরিদর্শন করে ২০১৯ সালের মে মাসে বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে সৌদি আরব থেকে বীজ আনেন সোলাইমান।

পরে গাজীপুর, ময়মনসিংহ থেকেও সৌদি খেজুরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পশ্চিম পাশের এক বিঘা জমিতে ২০টি চারাসহ বীজ রোপণ করেন। এতে তার খরচ হয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। চার বছরের ব্যবধানে কয়েকটি গাছে এসেছে খেজুর। পুরো রঙ না আসলেও আধাপাকা লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের খেজুর গাছে ঝুলছে। বর্তমানে তিন বিঘা জমিতে প্রায় ৩ হাজার গাছ ও চারা রয়েছে সোলাইমানের নার্সারিতে। তার নার্সারি থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জয়গায় চারা বিক্রি হচ্ছে। তার নার্সারিতে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার চারা ও গাছ রয়েছে। আর সোলাইমান এখন সফল উদ্যোক্তা। প্রতিদিন অনেকেই খেজুর বাগান দেখতে এসে তুলছেন ছবি ও সেলফি।

মো. সোলাইমান খান বলেন, ভাগ্য ফেরাতে ইউটিউবে ভিডিও দেখে ও খেজুর বাগান পরিদর্শন করে ২০১৯ সালের মে মাসে বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে সৌদি আরব থেকে বীজ আনি। পরে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ থেকেও সৌদি খেজুরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পশ্চিম পাশের জমিতে রোপণ করি। এক বিঘা জমিতে ২০ খেজুরের চারা বীজ রোপণ করতে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। নিজের মতো করে গাছের পরিচর্যা করতে থাকি।

পরে গাছের যত্ন নিয়ে বাগান করতে সক্ষম হই। পাশাপাশি নার্সারিও করি। নার্সারিতে বিভিন্ন দামে খেজুর চারা বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে আমার তিন বিঘা জমিতে ৩ হাজারের মত গাছ ও চারা রয়েছে। যার আনুমানিক মূল ৩০ লাখ টাকা। তবে ইচ্ছা ও পরিশ্রমই মানুষের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। উদ্যম নিয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে গেলে সফলতা আসে।

সোলায়মানের বাবা দলিল উদ্দিন খান বলেন, ছেলেকে খেজুর বাগান করার জন্য জমি দিছি। এখন সাফল্য এসেছে। খেজুর ও চারা বিক্রি করে আমাদের সংসার ভালোই চলে, আয়ও থাকে। আমি ও আমার আরো দুই ছেলে সোলাইমানকে সহযোগিতা করি।

স্থানীয় নতুন উদ্যোক্তা শাহ আলম মিয়া বলেন, সোলাইমানের কাছ থেকে চারা কিনে এনে আমি রোপণ করেছি। খেজুর গাছে খেজুরও ধরেছে। খেজুর থেকে চারা তৈরি করেছি, বিক্রি করব ভাবছি।

সাহেদ আহমেদ ও মনির হোসেনসহ দর্শনার্থীরা বলেন, সৌদি খেজুর বাগান করার ক্ষেত্রে সোলাইমান যে সফলতা দেখিয়েছেন এটা একটা চরম নজির। তাই আমরা দেখতে আসলাম, ছবি ও সেলফি তুললাম।

গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে খেজুর বাগান সার্বিকভাবে দেখভাল করা হচ্ছে। পাশাপাশি রোগবালাই ও সার ব্যবস্থাপনাসহ পরিচর্যার বিষয়ে ওই কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট