করলা চাষের জন্য জনপ্রিয়তা পাওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে এটি করলার গ্রাম নামে বেশ পরিচিত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা করলার গ্রাম নামেই চিনে থাকেন। স্থানীয় কৃষকরা করলার চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কৃষকরা করলার ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের পাড়ের টং গ্রামের করলার ফলনে খুশি।
সমগ্র গ্রাম জুড়ে সবুজ পাতায় ঘেরা করলার মাচা। পাড়ের টং গ্রামের প্রায় দেড়শত একর জুড়ে করলা চাষ হয়। স্থানীয় কৃষকরা করলা চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়াও এখানকার অনেক মানুষ করলার জমিতে কাজ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। বিভিন্ন জেলা উপজেলার পাইকাররা এই গ্রাম থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কেজি করলা কিনে নিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করেন। এখানকার পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করে উপার্জন করে থাকেন।
কৃষক নসু মিয়া বলেন, আমি এই গ্রামে প্রথম করলার চাষ শুরু করি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এর চাষে খরচ কম হয় ও লাভ বেশি করা যায়। তাই আমার দেখাদেখি একজন দুইজন করে এখন পুরো গ্রামের চাষিরাই এর চাষ করছেন। পাইকাররা প্রতিদিন এসে করলা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করছেন। আমরাও বিক্রি করে লাভবান হতে পারছি। এখানকার করলার সারাদেশে সুনাম রয়েছে।
একই গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, আমার নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কাজ করি। দিনপ্রতি মজুরী ২০০-৩০০ টাকা পাই। কৃষকরা করলা চাষ করায় আমরা কাজ করে আয় করতে পারছি। তাই আমাদের গ্রামে বেকারত্বের হার অনেকটাই কমে গেছে।
পাইকার আরজু মিয়া বলেন, এখানকার করলার বেশ সুনাম রয়েছে। আমি প্রতিদিনই এখান থেকে প্রায় ২-৩ মেট্রিক টন করলা কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করি। আমার মতো আরো অনেক পাইকাররা এখন থেকে করলা কিনে নিয়ে যান।
পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, আমিও একজন কৃষক। আমাদের এখান থেকে পাইকাররা করলা কিনে নিয়ে যান। আমরা একটা দাম নির্ধরণ করে করলা বিক্রি করে থাকি। এতে আমিসহ বাকি কৃষকদেরও লোকসানের ভয় থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, আগে অল্প পরিসরে হলেও বর্তমানে এই গ্রামের পুরোটা জুড়েই করলার চাষ হচ্ছে। চাষ বৃদ্ধির পাশাপাশি দিন দিন উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছেন। চলতি বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে করলার চাষ হয়েছে।
