Friday, May 17, 2024

ভালোবাসার কোনো বয়স নেই : তারিন

তারিন জাহান। নন্দিত অভিনেত্রী ও মডেল। গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘এটা আমাদের গল্প’। সিনেমাটির প্রচার-প্রচারণায় সেখানে ব্যস্ত আছেন তিনি। সিনেমাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন।

‘এটা আমাদের গল্প’ দিয়ে কলকাতার সিনেমায় আপনার অভিষেক হলো। কেমন লাগছে?

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে আমার কোনো সিনেমা মুক্তি পাওয়ায় ভীষণ ভালো লাগছে। জীবনের নতুন এক অধ্যায়। নতুন দর্শকের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি। চার বছর অপেক্ষার পর এটি মুক্তি পেল। সিনেমাটি যে মুক্তি পাবে, তা একসময় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কেউ কেউ ভেবেছিলেন সিনেমাটি বোধহয় আর হবেই না। এই দুরবস্থার মধ্যেও অবশেষে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। এ কারণে বেশি আনন্দ লাগছে।

দর্শকদের সাড়া মিলছে কেমন?

প্রথম দিনেই ‘নন্দন’ সিনেমা হল হাউসফুল ছিল। সামাজিক মাধ্যমে দর্শক সিনেমাটি নিয়ে ইতিবাচক কথা বলছেন। কলকাতার কিছু দর্শক আছেন– যারা আমার অভিনীত নাটক দেখেন, সেরকম কিছু দর্শকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তারাও সিনেমাটি দেখে বেশ প্রশংসা করেছেন। অনেক দর্শক আবার টিকিট না পেয়ে হল থেকে ফিরে গেছেন। এতেই প্রমাণ হয়, সিনেমাটি নিয়ে দর্শক আগ্রহ রয়েছে। এখন অসম্ভব গরম। বৈশাখের তপ্ত দুপুরেও হলে হলে ছিল দর্শকের দীর্ঘ সারি। তাপদাহ উপেক্ষা করে হলে গিয়ে যারা সিনেমাটি দেখছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

সিনেমার গল্প কী নিয়ে?

বউ-শাশুড়ির ভালোবাসা, রাগ-অভিমান নিয়েই এর গল্প। এটি দুজন বুড়োবুড়ির গল্পও, তাদের ভালোবাসার গল্প। একটা সময় বয়স্ক মানুষেরা একা হয়ে যান। তাদের সন্তানরা দূরে সরে যায় কিংবা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। একাকিত্ব জীবন কেউ চায় না। ভয়ের। কষ্টের। জীবনের একটি পর্যায়ে এসে আমরা বয়স্কদের একা করে দেই। তাদের বোঝা মনে হয়। এমনকি সময় দিতে ভালো লাগে না। এই গ্যাপই তাদের দূরে ঠেলে দেয়। আসলে ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, এই সিনেমায় তা উঠে এসেছে। দেখানো হয়েছে, যে কোনো বয়সে মানুষ প্রেমে পড়তে পারে। একজন বয়স্ক মানুষ নিঃসঙ্গ থাকার চেয়ে যদি ভালোবাসার মানুষ পায়, তাহলে সময়টাও ভালো কাটে। সব বয়সের মানুষের একজন ভালো সঙ্গী দরকার। এ সিনেমায় এই মেসেজগুলো সুন্দরভাবে এসেছে। সিনেমায় আমি অভিনয় করেছি বাংলাদেশের হিন্দু পরিবারের মেয়ের চরিত্রে। মেয়েটির বিয়ে হয় কলকাতার এক বনেদি পরিবারে।

সিনেমাটি দর্শক কেন দেখছেন বলে মনে করেন?

দেখুন, যে কোনো সিনেমার গল্প ও প্রেজেন্টেশন যদি ভালো হয়, দর্শকের মনের ভেতরের আবেগকে যদি নাড়া দেওয়া যায়– সেই ছবি দর্শক পছন্দ করবেনই। একটি ভালো সিনেমা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে বেশি। এ সিনেমার ক্ষেত্রেও এটি হয়েছে। সিনেমাটি সময়োপযোগী; প্রতিটি মানুষের, জেনারেশনের। এ কারণে সব শ্রেণির দর্শক সিনেমাটি গ্রহণ করেছেন।

শুটিংয়ের সময়কার কথা মনে পড়ে …

সিনেমাটির দৃশ্য ধারণ হয়েছিল করোনার ঠিক আগে। তখন ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েছিল। করোনা আক্রান্ত হয়ে যাই কিনা, এই ভেবে সারাক্ষণই ভয়ে ভয়ে থাকতে হতো। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বেশ যত্ন নিয়ে কাজটি করেছি। শুটিংয়ের সেটে প্রত্যেকেই আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছিলেন। সহশিল্পীদের ব্যবহার ও আতিথেয়তাও ভালো লেগেছে। সহশিল্পী খরাজ মুখার্জির কথা না বললেই নয়। একদিন খরাজ মুখার্জি দাদা বললেন, তুমি আমাদের অতিথি। বলো কী খেতে পছন্দ করো। তাকে বলেছি, আমি সবজি, ভর্তা পছন্দ করি। পরের দিন শুটিংয়ে তিনি আমার জন্য সবজি রান্না করে নিয়ে আসেন। এসব ভালোবাসা কখনও কি ভুলতে পারব। দশ দিন শুটিং করেছি। কাজের মাঝেই ছিলাম। দেবদূতের সঙ্গে আমার কাজের অভিজ্ঞতা আগেই ছিল। দারুণ একটি টিমওয়ার্ক। শতভাগ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ হয়েছে। শুটিংয়ে সবাই টাইম খুব মেইনটেইন করতেন। এটি আমার খুব ভালো লেগেছে।

কলকাতায় এখন কেমন কাটছে সময়?

কয়েক দিন হলো কলকাতায় এসেছি। এখানে এসে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছি। টেলিভিশনের নানা শোতে হাজির হচ্ছি। এরই মধ্যে সিনেমার প্রমোশনে আমি ও সিনেমার নির্মাতা মানসী সিনহা ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর আয়োজনে অতিথি হয়ে হাজির হয়েছিলাম। এখনও কিছু প্রমোশনের কাজ বাকি আছে। আরও কয়েক দিন কলকাতায় থেকে কাজগুলো শেষ করব।

নতুন কোন সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে?

কলকাতার অনেক নির্মাতা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এখনও কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। পাকাপাকি কথা হলে সবাইকে জানাতে পারব।

সূত্র: সমকাল।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট