Thursday, March 28, 2024

৭ মাসেই বাম্পার ফলন, আঙুর চাষে মুনসুরের বাজিমাত

গত দুই বছর আগে ভারত থেকে চারা আনিয়ে চাষ শুরু করেন। প্রথমে ফল মিষ্টি হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় থাকলেও ফলন পাওয়ার পর মিষ্টি হওয়ায় তার সেই চিন্তা দূর হয়েছে। বর্তমানে তার নিজ এলাকা সহ আশে পাশের এলাকায়ও তার এমন সাফল্যের খবর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি এখন এই ফল বিক্রি করে আর্থিকভাবে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। যশোরে আঙুর চাষে কৃষক মুনসুর আলীর সাফল্য।

কৃষক মুনসুর আলী যশোর সদরের লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি অনলাইনের মাধ্যমে আঙুরের চাষ দেখে নিজেও চাষ করতে আগ্রহী হন। তিনি দেখেন যে ভারতের মাটিতে এর ব্যাপক ফলন হয়েছে। এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে ভারত থেকে চারা সংগ্রহ করে ৩৩ শতাংশ জমিতে রোপন করেন। চারা রোপনের মাত্র ৭ মাসের মাথাতেই ফলন পান তিনি। ফলে গতবারের তুলনায় এবছর তিনি ৬-৭ গুণ বেশি ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। প্রথমবার প্রতি গাছে ১০-১৫ কেজি করে ফল পেলেও আবার তিনি প্রতি গাছে দেড় থেকে দুই মণ করে ফলন পাওয়ার আশা করছেন।

কৃষক মুনসুর আলী বলেন, আমি গত দুই বছর আগে অনলাইনের মাধ্যমে আঙুরের চাষ দেখি। তারপর চাষ করার পরিকল্পনা করি। প্রতিবেশীর মাধ্যমে ভারত থেকে চারা নিয়ে আসি। ১২০টি চয়ন জাতের চারা এনে ৩৩ শতক জমিতে রোপন করি। আমাদের এই জেলার অন্যান্য চাষিরা যে আঙুর চাষ করে তা টক। তবে আমার বাগানের আঙুর গুলো খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। ইটের গুঁড়া, মোটা বালু ও জৈব সারের মিশ্রণে জমি প্রস্তুত করেছি। একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ৮ ফুট দিয়েছি। এতে সব মিলিয়ে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গাছের গোড়া মাটি দিয়ে উঁচু করে দিয়েছি যেন পানি না জমে। আর উপরে মাচা তৈরী করেছি যেন গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

মুনসুর আরো বলেন, ভারতের মাটিতে এর ব্যাপক ফলন হওয়ায় আমি চাষ করার উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। চারা রোপনের মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই ফলন পেয়েছি। প্রথম বছর প্রতি গাছ থেকে ১০-১৫ করে ফলন পেয়েছিলাম। পরিকল্পনা করে ছিলাম ফল মিষ্টি হলে প্রথমবার বিক্রি করবো না। বিনামূল্যে মানুষকে বিতরণ করবো। তাই করেছি। এখন আবার ফলন এসেছে। প্রতিটি গাছেই আঙুর ঝুলছে। আগামী মাসে ফল বাজারজাত করার উপযোগি হবে। আশা করছি প্রতিটি গাছ থেকে দেড় থেকে দুই মণ করে ফলন পাবো। প্রতিটি আঙুরের চারা ২০০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। আগামীতে আরো বড় পরিসরে এর চাষ করবো। ফল মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন।

সদরের লেবুতলা গ্রামের কৃষক হাসমত আলী বলেন, আমি মুনসুর ভাইয়ের বাগানটি দেখতে এসেছি। শুনেছি তার বাগানের আঙুর গুলো খুব মিষ্টি। তার বাগানে প্রচুর ফলন এসেছে। আমিও এর চাষ করার পরিকল্পনা করছি। তার কাছ থেকে চারা ক্রয় করে নিবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, আমি কৃষক মুনসুরের বাগানটি দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অনেক সময় ভাল বীজ না পাওয়া গেলে বেশি ফলন ও ফলের মিষ্টতা থাকে না। তিনি চাষে আরো সম্প্রসারণ করণে তাকে আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো। তবে মুনসুরের বাগানের আঙুর যথেষ্ট মিষ্টি। তার বাগানে ফলনও বেশ ভাল হয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট