Tuesday, April 23, 2024

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে মোখা

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মোখা আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাতে একই এলাকায় (১২.১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার (১২ মে) সকাল পর্যন্ত উত্তর দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আরও ঘনীভূত হতে পারে। বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ৯০ কিলোমিটার থেকে ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এদিকে, ‍ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮০ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২০ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৮৫ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের সবশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা ঘণ্টায় প্রায় ১৭৭ কিলোমিটার বেগে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। তবে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার অনুসারে কক্সবাজার জেলার উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের যে অংশটি অতিক্রম করতে পারে, সেই অংশটি অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী থাকবে; ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে অতিক্রম করবে।

এর আগে দুপুরে যখন ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হয় তখন জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ পূর্বাভাস করেছিল ৯০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার)। ৪ ঘণ্টা পরে ঘূর্ণিঝড় মোখা শক্তি বৃদ্ধি করায় বলা হয়, ৯৫ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১৭৭ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টায়)।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মোখা ১৪ মে দুপুরে কক্সবাজার জেলা অতিক্রম করার সময় বাতাসের গড় গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় গড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার ও দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার।

এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা সিডরের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে। বর্তমান গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী সিডরের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট