Friday, March 29, 2024

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩৮ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের একমাত্র জয়। আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে জিতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ল বাংলার টাইগাররা।

সেঞ্চুরিয়নে আজ প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৭ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে, ব্যাটিং করতে নেমে ২৬.৩ ওভার খেলে ১ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ফলে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে সিরিজ জয় করলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার ব্যাটসম্যান জান্নেমান মালান, কুইন্টন ডি কক। দলীয় ৪৬ রানের মাথায় ইনিংসের সপ্তম ওভারে কুইন্টন ডি কককে আউট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ২ চারে ৮ বলে ১২ রান করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

তবে এর পরেই বল হাতের ঝড় তোলেন তাসকিন। তার গতির কাছে ধরা দেয় কাইল ভেরিয়েন্নে এবং জান্নেমান মালান। ইনিংসের ১৩ তম ওভারে শট খেলতে যেয়ে ব্যাটে বলে ঠিকমতো সংযোগ হয়নি ভেরিয়েন্নের। ব্যাটে লেগে বল ভেঙে দেয় উইকেট। ১৬ বলে ৯ রান করেন তিনি। ব্যক্তিগত পরের ওভারেই দুর্দান্ত খেলতে থাকা মালানকে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তাসকিন। ৫৬ বলে সাতটি চারে ৩৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মালান। এর পরের ওভারেই উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ২ রানের প্যাভেলিয়নে ফেরান সাকিব।

এদিকে, প্রায় আট বছরের ব্যবধানে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট শিকারের স্বাদ পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ। সময়ের হিসেবে গত ১০ বছরে ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেয়া প্রথম পেসার তিনি।

বুধবার সেঞ্চুরিয়ানে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৯ ওভারে ৩৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব গড়েন তাসকিন। তার আগুন ঝরানো বোলিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। সুপারস্পোর্ট পার্কে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ ওভারে তারা অলআউট হয় মাত্র ১৫৪ রানে। তাতে বাংলাদেশ পাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো কোনো সিরিজ জয়ের সুবাস।

তাসকিনের আগে ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে শেষবার ফাইফার নেয়া পেসার ছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার সাবেক এ তারকা ১০ ওভারে ৫ উইকেট শিকার করতে খরচ করেছিলেন ৫৪ রান। এরপর পেরিয়ে গেছে এক দশকেরও বেশি সময়। কিন্তু কেউই পাচ্ছিলেন না ৫ উইকেটের দেখা। অবশেষে তাসকিনের হাত ধরে অবসান হলো দীর্ঘ অপেক্ষার।

এদিন ১৩তম ওভারে কাইল ভেরেইনাকে বোল্ড করে নিজের উইকেট উৎসবের শুরু করেন তাসকিন। এরপর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে একে একে তুলে নেন আরো ৪ উইকেট। ১৫তম ওভারে তার বলে ইয়ানেমান মালান কুপোকাত হন। পরের স্পেলে যেন আরো বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন তিনি! ২৫তম ওভারে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে সাজঘরে ফেরানোর পর ২৯তম ওভারে ধরেন জোড়া শিকার।

ঐ ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা ডেভিড মিলারকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। এরপর ওভারের শেষ বলে কাগিসো রাবাদা হন তার পঞ্চম শিকার। তার পরের উইকেটগুলোর প্রতিটিতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মুশফিকুর রহিম। দারুণ চারটি ক্যাচ লুফে নেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট