Friday, March 29, 2024

জায়ান্ট পার্ল জাতের পেঁপে চাষে সফল নজরুল!

নামটি শুনে বিদেশি বা হাইব্রিড জাতের মনে হলেও এটি সম্পূর্ন দেশি জাতের পেঁপে। বিস্ময়কর এই জাতের গাছে ৭-৮ কেজি ওজনের ফল পাওয়া যায়। এটি কাঁচা অবস্থায় সবজি ও পাকলে খেতে খুব সুস্বাদু হয়। এই জাতের পেঁপের চাষ ও ফলন দেখে স্থানীয় অনেক কৃষক তার কাছ থেকে চারা নিয়ে চাষ করতে আগ্রহী হয়েছেন। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে জায়ান্ট পার্ল পেঁপে চাষে ড. নজরুল ইসলাম সফলতা পেয়েছেন।

ড. নজরুল ইসলাম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা। তিনি পড়ালেখা ফিশারিজ নিয়ে করেছেন। তারপর জাপানে সমুদ্র বিজ্ঞান নিয়ে পিএইচডি করেন। এরপর দেশে ফিরে একটি প্রকল্পে কাজ করেন। করোনার সময় সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। কোটচাঁদপুরে তিনি নিজেই একটি খামার করেন। সেখানে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেন আর স্থানীয় এক কৃষক থেকে এই জাতের পেঁপের বীজ সংগ্রহ করে পুকুরের পাড়ে বপন করেন। এখন তার খামারের প্রতিটি গাছেই পেঁপে ধরেছে। স্থানীয় অনেকেই তার কাছে বীজ সংগ্রহ করতে আসছেন। ছোট এই গাছগুলোতে আসা একেকটি পেঁপের ওজন ৩-৮ কেজি পর্যন্ত হয়।

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমার কোনো কাজ ছিলনা। তারপর নিজেই খামার করার পরিকল্পনা করি। পুকুর খনন করে সেখানে মাছ চাষ করি। স্থানীয় একজন কৃষক থেকে জায়ান্ট পার্ল পেঁপের বীজ সংগ্রহ করে পুকুরের পাড়ে বপন করি। এটি হাইব্রিড বা বিদেশি জাতের নয়। এটি দেশি জাতের একটি পেঁপে। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে চাষ শুরু করি। তারপর ধীরে ধীরে গাছ বড় হতে থাকলে ফলন পেতে শুরু করি। তাই তিনি ফলন পাননি। আমি উর্বর মাটি ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে চাষ করায় ব্যাপক ফলন পেয়েছি। এর এককটি ফল ৩-৮ কেজি পর্যন্ত হয়। আমি যার কাছ থেকে বীজ নিয়েছিলাম তিনি সঠিক পরিচর্যা করে চাষ করতে পারেননি।

নজরুল আরও বলেন, আমি এর চাষে পুকুরের নিচের উর্বর মাটি ও জৈব সার ব্যবহার করেছি। তাই বেশি ফলন পেয়েছি। মৌসুমে একেকটি গাছে ৪ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। আর প্রতিটি পেঁপের ওজন প্রায় ৩-৮ পর্যন্ত হয়। তখন সর্বোচ্চ ৫ কেজি পর্যন্ত হয় থাকে। এছাড়াও এই জাতের চারা রোপনের ৬ মাসের মধ্যেই ফল বাজারজাত করা যায়। কখনো ১০ কেজিরও পাওয়া যায়। তারপরের বার ওজন কিছুটা কমে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহাসীন আলী বলেন, আমরা নজরুলের খামারটি পরিদর্শন করেছি। তিনি সেখানে জায়ান্ট পার্ল জাতের পেঁপের চাষ করছেন। এই জাতের পেঁপেগুলো আকারে বেশ বড় হয়। প্রতিটি পেঁপের ওজন প্রায় ৮ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি দেশি জাতের একটি পেঁপে। স্থানীয় অনেক কৃষক তার কাছে থেকে বীজ সংগ্রহ করছেন। কাঁচা থাকতে সবজি হিসেবে ও পাকা ফল হিসেবেও বিক্রি করা যায়।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট