Thursday, April 18, 2024

গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে কোরবানির জন্য গরু পালনে আগ্রহ কমেছে!

দেশের গরু পালনকারী এলাকার মধ্যে অন্যতম হলো পাবনার বেড়া উপজেলা। বর্তমানে এই উপজেলায় গরু পালনের খরচ বাড়ার সাথে সাথে হাটে গরুর দামও বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গরু মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব কোরবানির জন্য গরু পালনের ওপর পড়েছে। গরু পালনকারীরা পরিচালনা খরচ বহন করতে না পেরে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন।

এবার হাটগুলোতে ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। গরু পালনকারীরা হাটে গরু নিয়ে আসলেও খামারিদের কিনতে আসতে দেখা যায়নি। হাটে এখন গরুর দাম যথেষ্ঠ নয় বলে খামারিরা মনে করেন। এছাড়াও গরু পালনে এখন আগের তুলনায় খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। তাই দ্বিগুণ খরচ করে গরু পালন করে পরে লাভ করতে পারবেন না বলে জানান তারা। এতে এখন যারা গরু বিক্রি করে দিতে চান ক্রেতার অভাবে তারাও বিক্রি করতে পারছেন না। খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রমজানের আগে থেকেই খামারিরা গরু কিনে রাখেন। তারপর তা কোরবানির ঈদ পর্যন্ত মোটাতাজা করে বিক্রি করেন।

খামারিরা জানায়, বিগত ১ বছর ধরে গোখাদ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়াও তা দফায় দফায় বাড়ছে। গত ২-৩ সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো আরেক দফায় খাদ্যের দাম বেড়ে খামারিদের খরচ আরো বেড়েছে। এক বছর আগে গম বিক্রি হতো ২৪-২৫ টাকায়, খেসারি ও এংকর ডাল ৫৫ টাকায়, মসুরের ভুসি ৩৭ টাকায় বাকি আরো খাদ্যের উপকরণের দামও কম ছিল। এছাড়াও আগে ৩৫০ টাকা মন খড় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৫৫০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে বেড়েছে ঘাসের দাম।

বেড়া পৌর এলাকার খামারি মাহফুজা মীনা বলেন, আমার খামারে ৮০ টি গরু ছিল। গোখাদ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খরচ সামলাতে না পেরে ২০টি গরু বিক্রি করে দেই। হাটে যদি ভালো দামে বিক্রি করতে না পারি তাহলে বিরাট আকারের লোকসানে পড়তে হবে। এরপরেও মাসে ১ লাখ টাকার মতো লোকসান দিয়ে ২০-২২টি গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করতেছি।

বেড়া বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা আব্দুল মতিন বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে যে গরু ৭০-৭৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে এসেছি। এখন সেই সাইজের গরুর দাম ৮০-৮৫ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে ষাঁড় গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং গাই গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই প্রতি কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়েছে।

বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে অনেকেই লোকসানের ভয়ে গরু পালনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে আমরা মনে করি গরু পালনকারীরা শেষ পর্যন্ত গরু পালনে তারা এগিয়ে আসবেন।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট