Thursday, November 30, 2023

মুক্তি পেতে যাচ্ছে এসডি রুবেলের সিনেমা ‘বৃদ্ধাশ্রম’

চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে গায়ক এসডি রুবেলের। ২৯ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে তার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘বৃদ্ধাশ্রম’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। যেখানে এসডি রুবেলের বিপরীতে অভিনয় করছেন চিত্রনায়িকা ববি। সামাজিক সচেতনার বার্তা দেওয়া চলচ্চিত্রটি ১৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। আগামীতে ‘নীল আকাশে পাখি ওড়ে’সহ আরও দুটি ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে তিনি। চলচ্চিত্র ও গান প্রসঙ্গে কথা বললেন এসডি রুবেল।

কয়েক বছর আগে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নির্মাণ করেছেন, কিন্তু মুক্তি দিতে এতো দেরি করলেন কেন?

২০১৯ এর ডিসেম্বরে সেন্সর পেয়েছিলাম। মুক্তির ঠিক আগে কোভিড আসে। এরপর প্রায় দু’বছর মহামারীতে সিনেমা হল সেভাবে চলেনি। ওইসময় ছবি মুক্তি দেওয়ার কোনো অবস্থা ছিল না। এক কোটি টাকার এই প্রজেক্ট কখন মুক্তি দেব সেটা নিয়ে ভাবতে হয়েছে। কারণ, আমি চেয়েছি ছবিটি যেন মানুষ দেখেন। পরে দুবার মুক্তির ডেট নিলাম। একবার ধর্মীয় কারণে মুক্তি দেইনি, আরেকবার ‘পাঠান’ বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়ায় সিনেমা হল মালিকরা আমাকে মুক্তি পেছাতে বললেন। শুধু আমি নই, আমার সঙ্গে আরও অনেকেই তাদের ছবি মুক্তি পেছালেন। আমি মনে করি, আমাদের দেশের ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাওয়া উচিত। দেশের সংস্কৃতি বাঁচাতে হলে সবার আগে দেশপ্রেম থাকতে হবে। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে দেশপ্রেম উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে ব্যবসার দরকার আছে, শো কম বেশি করে ছাড় দেয়া যায়; কিন্তু ক্যাপিটালাইজেশন সামনে রেখে ব্যবসায়িক প্রবণতা বেড়ে চলছে।

শুনেছি নতুন পরিচালকদের ছবি মুক্তির আগে হল পাওয়া নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়! আপনি এই সমস্যা ফেইস করছেন?

প্রত্যেক পরিচালক প্রযোজক এটা ফেইস করছেন। যেসব সিনেমা হল চালু আছে সেই হল কর্তৃপক্ষরা চাইলে সিনেপ্লেক্স ব্লকবাস্টারের মতো পরিবেশ করতে পারেন। কিন্তু যে কোনো ভাবে চলছে চলুক এই মানসিকতা রাখা ঠিক না। সিনেমা দেখা বিনোদন বিলাসিতা। সেখানে দর্শকরা ছবি দেখতে গিয়ে যদি ভালো পরিবেশ না পান তবে তো হলমুখী হবেন না। বৃদ্ধাশ্রম ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর মধ্যে প্রেম ভালোবাসার পাশাপাশি শিক্ষামূলক অনেককিছু আছে, যা সচেতনতা বাড়াবে। এই ধরনের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনের ছবি আজকাল হচ্ছে না। মা বাবার সঙ্গে বন্ধন ও প্রেম হচ্ছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেম। কাজেই দর্শকদের এই ধরনের ছবিকে উৎসাহিত করা সবার দায়িত্ব।

কিন্তু নাচ-গান, অ্যাকশন নির্ভর ছবি বেশি দেখতে চায় দর্শক!

এজন্য গণমাধ্যম অনেকটা দায়ী। ব্যবসার জন্য গণমাধ্যম নাচ গান নগ্নতা তুল ধরে। ইটস নট ফেয়ার। আমি যেটা বানিয়েছি ‘বৃদ্ধাশ্রম’ এটাই চলচ্চিত্র এবং চলমান চিত্র। পরিচালক-শিল্পীর পাশাপাশি এই ভালো কাজ দেখতে অনুপ্রাণিত করার দায়িত্ব গণমাধ্যমের। এই ছবিতে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটে সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন তুলে এনেছি। এখানে কমেডি ও চারটে গান আছে। সেইসঙ্গে ক্লাইমেক্স ও সামাজিক কমিটমেন্টের অনেক মানবিক দিক উঠে এসেছে। যার মধ্যে মানবিকতা আছে সে আমার এই ছবি দেখলে কাঁদবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। মুখে যেভাবে বলি দেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে ঠিক একইভাবে দেশপ্রেমের ক্ষেত্রেও এগিয়ে আসতে হবে। নইলে শিল্পী সাহিত্যিকরা সারাজীবন কষ্ট পেয়ে যাবে।

একযুগ আগে ‘এভাবেই ভালোবাসা হয়’ ছবি করেছিলেন, এবার আসছেন ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নিয়ে। আগামীতে কি আবার গ্যাপ নেবেন?

তিনটি ছবির কাজ করছি। সামনে যেগুলো বানাবো সেগুলোর গল্প কয়েকবছর অ্যাডভান্স মাথায় রেখে করবো। টেকনোলোজির এমন কোনো দিক নেই যেখানে আমার সামান্য স্টাডি নেই। সব বিষয়ে নিয়ে আমি স্টাডি করি। ক্ষুদ্র জ্ঞানে বলতে চাই, চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য থেকে প্রায় সব ক্ষেত্রে আমার জ্ঞান আছে। রোম্যান্টিক বিষয়ের পাশাপাশি আমি একটি কমিটমেন্ট নিয়ে আগাচ্ছি যেটা থেকে দর্শকরা কোনো না কোনো সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার বার্তা পাবে।

আপনি গানের মানুষ। গানে কি কম সময় দিচ্ছেন?

বৃদ্ধাশ্রমে আমার তিনটি গান আছে। প্রতিমাসে এসডি রুবেল ফাউন্ডেশন থেকে গান বের হচ্ছে। কিন্তু ভিডিও আকারে আমার পক্ষে ব্যয়বহুল কাজ করা সম্ভব না। কারণ, স্পন্সর নেই, রিটার্ন পাওয়ার স্কোপ নেই। কোম্পানিগুলোকে বলবো আমাদের সাংস্কৃতি রক্ষায় আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে আমার গান করা থেমে থাকবে না, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলবে।

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন।

এই সম্পর্কিত আরও খবর

সর্বশেষ আপডেট